চিংড়ির গমন অঙ্গের নাম কি? বিস্তারিত আলোচনা।

চিংড়ি (Shrimp) হলো একটি জলজ অমেরুদণ্ডী প্রাণী, যা তার গঠন এবং চলাচলের জন্য বিশেষভাবে অভিযোজিত। চিংড়ির চলাচলের প্রধান অঙ্গ হলো পায়ের মতো অংশ যা পেরিওপডস (Pereiopods) এবং প্লিউরোপডস (Pleopods) নামে পরিচিত।

চিংড়ির গমন অঙ্গ: পেরিওপডস ও প্লিউরোপডসের ভূমিকা

পেরিওপডস (Pereiopods) এবং প্লিউরোপডস (Pleopods) এর গঠন ও কার্যপ্রণালী

পেরিওপডস (Pereiopods): চিংড়ির দেহের থোরাসিক অংশে অবস্থিত এই পেরিওপডসগুলো প্রধানত তার চলাচল বা হাঁটার জন্য ব্যবহৃত হয়। এগুলো চিংড়ির সামনের পায়ের মতো অংশ, যেগুলো ভূমিতে বা সমুদ্রতলের উপর দিয়ে চলাচলের সময় ব্যবহৃত হয়। সাধারণত চিংড়ির প্রতি পাশে পাঁচটি করে পেরিওপডস থাকে, যা তাকে সমুদ্রতল বা অন্যান্য পৃষ্ঠের উপর দিয়ে ধীর গতিতে হাঁটতে সাহায্য করে। 

প্লিউরোপডস (Pleopods): চিংড়ির দেহের পেটের নিচের অংশে অবস্থিত এই প্লিউরোপডসগুলো প্রধানত সাঁতার কাটার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই পা গুলি চিংড়িকে দ্রুত গতিতে চলাচল করতে সাহায্য করে, বিশেষ করে যখন এটি পানির মধ্য দিয়ে সাঁতার কাটে। চিংড়ি যখন তীব্র গতিতে পালাতে চায় বা দ্রুত স্থান পরিবর্তন করতে চায়, তখন এটি তার প্লিউরোপডস ব্যবহার করে পানির মধ্য দিয়ে পিছনের দিকে সাঁতার কাটে। এছাড়াও, প্লিউরোপডসগুলো ডিম বহন করার কাজেও ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে মেয়ে চিংড়ির ক্ষেত্রে।

চিংড়ির গতি প্রক্রিয়া

চিংড়ি সাধারণত তার পেরিওপডস ব্যবহার করে সমুদ্রতল বা পাথরের উপর দিয়ে ধীরে ধীরে চলাচল করে। এই পা গুলির সাহায্যে চিংড়ি তার গন্তব্যস্থলে পৌঁছায়, খাদ্য খোঁজে এবং পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলে।

চিংড়ির প্লিউরোপডসগুলো তার মূল সাঁতার কাটার অঙ্গ। যখন চিংড়ি দ্রুতগতিতে সাঁতার কাটে বা বিপদের সম্মুখীন হয়, তখন এটি তার প্লিউরোপডস ব্যবহার করে, যা তাকে পিছনের দিকে ধাক্কা দেয় এবং দ্রুত স্থান পরিবর্তন করতে সাহায্য করে। এই সাঁতার কাটার প্রক্রিয়া চিংড়ির আত্মরক্ষার জন্য অত্যন্ত কার্যকর।


চিংড়ির পেরিওপডস এবং প্লিউরোপডস হলো তার চলাচলের প্রধান অঙ্গ। পেরিওপডসগুলো তাকে মাটিতে চলাচল করতে সাহায্য করে, যেখানে প্লিউরোপডসগুলো সাঁতার কাটার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই অঙ্গগুলোর সমন্বয় চিংড়িকে তার পরিবেশে সফলভাবে চলাচল করতে এবং বেঁচে থাকতে সহায়তা করে।

Next Post Previous Post